পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৪

পহেলা বৈশাখের সূচনা এবং উদযাপন


 (এই লেখাটি 'মেঘফুল' ছোট কাগজের এপ্রিল ২০১৪ সংখ্যায় প্রকাশিত)
পহেলা বৈশাখ তথা বঙ্গাব্দের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
১৫৭৬ খৃষ্টাব্দে রাজমহলের যুদ্ধে বাংলার শাসক দাউদ খান কাররানির মৃত্যুর মাধ্যমে বাংলা সম্পূর্ণ রূপে সুবাহ হিসেবে মুঘল শাসনের অধীনস্থ হয়, দিল্লীর মসনদে তখন ক্ষমতায় সম্রাট আকবর (শাসনকাল ১৫৫৬ খৃষ্টাব্দ হতে ১৬০৫ খৃষ্টাব্দ)। সে সময় প্রায় সমগ্র ভারতবর্ষে কৃষি ও ভূমি কর বা খাজনা আদায় হতো ইসলামি হিজরী বর্ষপঞ্জি অনুসারে। বাংলাতেও তাই। অথচ কৃষিকাজ সম্পাদিত হয় সৌরবর্ষ তথা সৌরমাসের হিসেবে। কিন্তু হিজরী সন নির্ভরশীল হলো চাঁদের উপর, সঙ্গত কারণেই কর আদায় আর কৃষি ফলনের সময় সংগতিপূর্ণ হচ্ছিল না। চন্দ্রবর্ষ সম্পূর্ণ হয় ৩৫৪ দিনে আর সৌরবর্ষ ৩৬৫ দিনে। সে কারণে ৩১ চন্দ্র বছর হলো ৩০ সৌর বছরের সমান। আকবরের বিশিষ্ট মন্ত্রী এবং বিজ্ঞ সভাসদ আবুল ফজল একদিন সম্রাাটকে একান্তে এই বাস্তবতা বোঝালেন। সম্রাট আকবর বিষয়টি অনুধাবন করলেন এবং এই গরমিল থেকে সরে আসার জন্য প্রাচীন বর্ষপঞ্জি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করলেন। সম্রাটের আদেশে নবরত্নসভার বিশিষ্ট একজন এবং তৎকালীন বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ আমির ফতেহউল্লাহ সিরাজি চান্দ্রমাস নির্ভর হিজরী বর্ষপঞ্জি এবং সৌরমাস নির্ভর  হিন্দু বর্ষপঞ্জি গবেষণা করে একটি নতুন বর্ষপঞ্জি প্রস্তাব করেন। সে মতে সম্রাট ১৫৮৪ খৃষ্টাব্দের ১০ই মার্চ বা ১১ই মার্চ  (৯৯২ হিজরী সনে) একটি ফরমান জারি করেন এবং নতুন বর্ষপঞ্জি প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম দেয়া হয় তারিখ-ই-ইলাহী। তবে ঐ ফরমানে বলা হয় নতুন এই পদ্ধতি কার্যকর ধরা হবে পানি পথের দ্বিতীয় যুদ্ধে হিমুকে পরাজিত করে সম্রাট আকবরের সিংহাসনে আরোহণের ঐতিহাসিক দিনটি থেকে। দিনটি হলো ৫ই নভেম্বর, ১৫৫৬ খৃষ্টাব্দ   ( ১০ ই রবিউল আউয়াল ৯৬৩ হিজরী) ।