পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০১৯

সময়ই সব, বছর কেবল সময়ের হিসাব বৈ কিছু নয়।

গতকাল ১৫ই মে ছিলো আমার জন্মদিন। অগনিত জনের শুভেচ্ছা বার্তা নিঃসন্দেহে আপ্লুত হবার মত। প্রযুক্তির এই সহজীকরণ বিষয়টি আমাকে আনন্দ দেয়, সহজে শুভেচ্ছা প্রদান এবং গ্রহন দুইই হয়ে যায়। শুভেচ্ছা প্রদানকারী প্রতিজন সুধীকে সম্মিলিতভাবে অভিনন্দন জানাই।

তবে এই দিবস , সময় , বছর নিয়ে আমার কিছু ভাবনা আছে। সে নিয়েই এই লেখার উদ্দেশ্য।

সময় কি? সময় একটি ডাইমেশন বলে দিলেই উত্তরটা সহজ হয়ে যায়। এই ডাইমেনশেনর সুনির্দিষ্ট শুরুর হিসাব এখনো  পুংখানুপুংভাবে হয়েতা হিসাব করা যায়নি ( তবে  বিজ্ঞানীদের চলমান ধারণা ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে এক বিগ ব্যাংগ থেকে সময়ের সৃষ্টি) ।

এই যে শব্দটি 'হিসাব' এইটিই আমার ভাবনার সূচনার সূতিকাগার। আমরা মানুষেরাই সভ্যতার সাথে সাথে সময়ের হিসাব রাখার জন্য বিভিন্ন পরিমাপ সৃষ্টি করেছি।
তার মধ্যে সর্বাধিক প্রচিলত সৌর বছর বা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার এর পরিমাপটিতে সূর্যকে একবার পরিভ্রমন করতে পৃথিবীর যে সময় লাগে সেই সময়টাকে  মোটামুটি তুলনা করে এক বছর নাম দেয়া হয়েছে। আবার চন্দ্রের পৃথিবী একবার পরিভ্রমন সময়কে একিদন ধরে একবছরকে ৩৬৫দিন ধরা হয়েছে।
এই হিসাবটা মিলিয়ে একজন মানুষের জীবনের মোট জীবিত সময়কে ৩৬৫ দিন করে করে মোটামুটি ভাগ করা হয়।
এতো আমরা সবাই জানি।


কিন্তু এই ৩৬৫ দিন ভাগটি তো আবার ৩৬৫দিন করেই চলতে থাকে তা না, এর মধ্যে আবার অধিবর্ষ আছে।
যেমন : ২০১৫ সালের ১৫ই মে থেকে ৩৬৫ দিন পর আমার জন্মদিবস আসে নি, এসেছিলো ৩৬৬দিন পর। কারণ ২০১৬র ফেব্রুয়ারি ছিলো ২৯দিনে ( লিপইয়ার)
আবার ২০১৬ এর ১৫ই মে র পর ৩৬৫ দিন পর এসেছিলো পরের জন্মদিন। এইভাবে ২০১৯ এর ১৫ইমে যে জন্মদিন চলে গেলো তার ৩৬৬ দিন পর আসেব পরের জন্মদিন।

অর্থাৎ চক্রটি নির্দিষ্ট কোন সুষম ধারা হুবুহ মানছে না। মানার দরকারো নেই, পুরো দিবেসর বিষয়টা আসলে একটা হিসাব। যে কারণে দিবেসর উপর কোন বিশেষত্ব নির্ভর করার কথা নয়, শুভ অশুভ বিষয় থাকার কথা নয়।

আবার মহাবিশ্বে যেখানে সৌর ছাড়িয়ে অসীমে ধাবমান সময়, সেখানে আলোর গতি দিয়ে সময়ের হিসেব করা হয়েছে, ( আলো এক বছরে যে পরিমাণ পথ অতিক্রম করে তাই এক আলোক বছর)। ওখানেও আমাদের সৌর বছরে আলোর গতিবেগ কত তা তুলনা করে হিসাব করা ছাড়া  মানুষের আর ভালো  ও সহজ বোঝার উপায় বের করা হয়তো সুকঠিন কর্ম।

এছাড়া আবার আরেক ধরনের প্রাচীন হিসেবে এখনো অনেক অঞ্চলে প্রচলিত- সেটা হলো চন্দ্র বর্ষ।  একদা আরবী আর বাংলা চন্দ্র বছরে মিল থাকলেও বাংলা চন্দ্র বর্ষ বাংলাদেশে সৌর বছরের সাথে মিলিয়ে মাস ৩০/৩১ দিন বানিয়ে ৩৬৫/৩৬৬ দিনের সাথে সমতায় ফেলা হয়েছে।
কিন্তু আরবী চন্দ্র বর্ষ এখনো আগের মতই রয়েছে। আরবী বছর আবার ৩৬৫/৩৬৬দিন পর্যন্ত না গিয়ে  ৩৫৪ বা ৩৫৫ দিনে শেষ হয়ে যায়।

সেকারণে আমার নিজের বয়স  সৌর বছরে ৪১ হলেও আরবী বছরে আমার বয়স ৪২ বছর আড়াই মাস।

কারণ  -
১৫ই মে ১৯৭৮খ্রিঃ   ছিলো ৭ই জমাদিউস সানি ১৩৯৮ হিজরী

আর
১৫ই মে ২০১৯ খ্রিঃ  ছিলো  ১০ই রমজান ১৪৪০ হিজরী।
 (২০১৯-১৯৭৮=৪১)  কিন্তু ( ১৪৪০-১৩৯৮=৪২)

এক এক হিসাবে এক এক রকম হতেই পারে। হয়তো প্রাচীন কালে প্রাচীন সভ্যতাগুলোতে আরো নানাপদের বছরের সময়ের হিসাব ছিলো।যেমন-মায়ান ক্যালেন্ডার, শঙ্কাব্দ, সুমেরীয় ক্যালেন্ডার ( সম্ভবত সুমেরিয় সভ্যতায় প্রথম চন্দ্র বর্ষের ও ১২ মাসের ধারণা সূচনা হয়েছিল)

হিসাবের সুবিধার জন্য এবং  জীবন থেকে সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে এটা স্মরণ রাখার জন্য দিবসের বাৎসরিক পুনঃ আগমণ এবং পালন, শুভেচ্ছা  প্রেরণ গ্রহণ অবশ্যই অত্যাবশ্যকীয়, বিষয়টি আনন্দঘনও কখনও কিন্ত দিবস কখনই বাড়াবাড়ির  বিষয় হতে পারে না। দিবস কেবল একটা হিসাব বৈ তো কিছু নয়।

#দিবস
#বছর
#জন্মদিন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন